Film Review: Kadambari

‘কাদম্বরী’ নিয়ে বেশ কিছুটা প্রত্যাশা ছিল। কঙ্কনা সেনশর্মা তাঁর প্রথম ছবি ‘তিতলি’ থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ভীষণরকম স্বাভাবিক অভিনয় কাকে বলে। এখানেও তিনি ব্যতিক্রম নন। রাবীন্দ্রিক আবহ যথাযথ তৈরী করা হয়েছে সময়োপযোগী set design-এর মাধ্যমে। তবু ঠিক জমলনা যেন।

তার প্রধান কারণ, খুব তাড়াতাড়ি বিভিন্ন দৃশ্য শেষ করে দেওয়া, যেখানে আরেকটু elaborate করার দরকার ছিল। যেমন সেই দৃশ্যটি যেখানে রবীন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ আর কাদম্বরী দেবী গঙ্গাবক্ষে নৌকায় রাত্রিযাপন করছেন। পলতা আসার উপক্রম হলে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথকে প্রস্তাব দিলেন adventurous কিছু করা যায় কিনা। অতএব সাঁতরে নদীপার হওয়ার আহ্বান। তাতে কাদম্বরী রবীন্দ্রনাথের safety নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রথমে, তারপর তাঁর মনে পড়ল নিজের স্বামী জ্যোতিরিন্দ্রনাথের safety-র কথা। ব্যাপার গোলমেলে বুঝলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ। হালকা একটা অভিব্যক্তি দিলেন। ব্যস, দৃশ্য শেষ। পুরো সিনেমার মধ্যে এটা একটা অন্যতম প্রধান দৃশ্য যেটা একইসাথে পরকীয়া আর স্বকীয়ার অস্তিত্ব প্রথম স্পষ্টভাবে প্রকট করছে। আরেকটু illustration প্রয়োজন ছিল, নাহলে এইরকম মোড়গুলো ব্যাপ্তি পায়না পুরোপুরি।

চিত্রনাট্য সুন্দর, যদিও ক্ষেত্রবিশেষে দুর্বল। সুমন ঘোষের পরিচালনায় টানটান ব্যাপারটা বোধ করলামনা কোথাও। পরমব্রতর অভিনয় আমার কখনই ভালো লাগেনা তেমন। বিক্রম ঘোষের সুরারোপিত ‘কাছের সুরে’ (কন্ঠ: শ্রাবণী সেন) এবং ‘আজ নতুন প্রভাত’ (কন্ঠ: কৌশিকী) গানদুটি ভারী সুন্দর। Interestingly এমনভাবে তিনি সুর দিয়েছেন আর music arrangement করেছেন যে মনে হচ্ছিল যেন এগুলি রবীন্দ্রসঙ্গীত। পরে আমার ভুল ভেঙেছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত গুলির আর বিদ্যাপতির লেখা/সুরারোপিত ‘ভরা ভাদর’-এর (কন্ঠ: রশিদ খান) musical arrangement (done by Bickram Ghosh) এককথায় অনবদ্য। Background score-ও তিনি দক্ষ হাতে সামলেছেন। সবমিলিয়ে সিনেমাটির music মন ছুঁয়ে গেল।

কিছু ঘটনা সম্পূর্ণ অনুপস্হিত সিনেমাটিতে যা দেখালে রবীন্দ্রনাথ -কাদম্বরীর প্রেমের কয়েকটি বৃত্ত বোঝানো যেত, যেমন ১) বিলেতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ যেসব চিঠি লিখেছিলেন কাদম্বরী দেবীকে, তার মধ্যে কয়েকটিতে ইংরেজ মেয়েদের সৌন্দর্য, প্রশংসা আর তাদের প্রতি রবীন্দ্রনাথ সহ বিভিন্ন পুরুষদের অনুরাগ সম্পর্কিত কিছু লেখা ছিল যা পড়ে কাদম্বরী দেবী স্বাভাবিকভাবেই খুশী হননি।

২) সিনেমার Climax-এর দিকে কাদম্বরী দেবী রবীন্দ্রনাথের ঘরে ঢুকে একটি লেখা পড়েন - ‘হেথা হতে যাও পুরাতন…’। খালি এটুকু দেখান হয়েছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঐ দিন কাদম্বরী দেবী রবীন্দ্রনাথের লেখা আরও কয়েকটা লেখা পড়েন যাতে মৃণালিনী দেবীকে (রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী) নিয়ে রবীন্দ্রনাথ কিছু নারীশরীরের বিভিন্ন অঙ্গ সৌন্দর্য সংক্রান্ত কবিতা লিখেছিলেন। কাদম্বরী দেবী স্বাভাবিকভাবেই দুঃখ পান।

৩) রবীন্দ্রনাথ বেশ কিছু কবিতা/চিঠি লিখেছিলেন কাদম্বরী দেবীর বিস্তারিত দেহ সৌন্দর্য নিয়ে যা প্রমাণ করে তাদের ঘনিষ্ঠতা শারীরিক পর্যায়েও ছিল অথচ সিনেমায় এই ব্যাপার একদম উধাও, হয়তো বেশীরভাগ বাঙালী এটা accept করতে পারবেনা সেই ভয়ে। একেই বিতর্কিত topic, তার উপর বাঙালি নিতে না পারলে box office ঝুলে যাবে তো, সেজন্যই…

রাধা কৃষ্ণ থেকে আন্না কারেনিনা। চতুরঙ্গ অথবা বিবর। পৃথিবীতে পরকীয়া সবসময়ই author/film maker/reader/audience দের কাছে দারুণ interesting. স্বকীয়া নিয়ে আর কার মাথাব্যথা ? একবার দেখাই যায়। কিন্তু ঐ যে বললাম, বেশী আশা করে যাবেননা। হতাশ হতে পারেন।

Review by :দীপশ্রী বর্ধন
Disclaimer: The views expressed in the review are entirely of the reviewer and may not be attributed to the editorial team.

Comments
  1. Sudip Dey
  2. dbdipashri@gmail.com' Dipashri Bardhan
  3. anindita mandal

Leave a Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *